Thursday, 31 October 2019

ড্রিমল্যান্ড দার্জিলিং


                      ড্রিমল‍্যান্ড দার্জিলিং


দার্জিলিং হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পাহাড়ঘেরা একটি সুন্দর শহর। এই শহরটি হিমালয়ের শিবালিক পর্বতশ্রেণীতে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬,৭০০ ফু (২,০৪২.২ মি) উচ্চতায় অবস্থিত। শহরটি চা শিল্প ও বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ।



আকাশপথে এখানকার কাছের এয়ারপোর্ট বাগডোগড়া। শিলিগুড়ি থেকে নিয়মিত বাস সংযোগ ব্যবস্থা বর্তমান। নিউ জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়ি এখানকার নিকটস্থ রেল-স্টেশন।
ছিলাম কলকাতায়, শিলিগুরু হয়ে এসেছিলাম মেঘের মুলুক দার্জিলিঙে। কলকাতা থেকে প্রায় সাড়ে সাতহাজার ফুট উঁচুতে পাহাড়ে ঘেরা এই মেঘের শহর। দার্জিলিঙের পথে বনের শোভা বড়োই চমৎকার।


দার্জিলিং শহরে হিমালয়ের পাহাড়ী অঞ্চলের নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া বিরাজ করে প্রায় সবসময়ই। দার্জিলিংয়ের বনের ভেতরে কেউ একলা গেলে প্রাণটা কেঁপে উঠতে পারে। কিন্তু টয় ট্রেনে গেলে কোনো ভয় নেই। বরংচ প্রকৃতিকে আরো দারুণভাবে চাক্ষুস করা যাবে।


দেরহাজার ফুটের উঁচুতে উঠতে থাকলে ক্ষণিক বাদে বাদেই মেঘের সাথে দেখা হতে থাকে। দার্জিলিঙের পথে সব থেকে উঁচু স্টেশন হল ঘুম স্টেশন। এটি খ্যাত একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ঘুম স্টেশনটি থেকে দার্জিলিং মোটে পাঁচমাইল দূরত্বে।



পাহাড়ে ঘেরা দার্জিলিং এর পথ ধরে চলতে থাকলে দেখা যায় সুন্দর মনোরম দৃশ্য। রাস্তার ধারে পরে থাকে কত ছোট বড় পাথর আর রংবাহরী কত অজানা অচেনা নানাধরনের ফুল ও ফল গাছ। পাহাড়ের একধারে চোখে পড়ে লম্বা লম্বা গাছের সবুজ ঘন পাহাড়ি জঙ্গল, আর এক দিকে নীলকন্যা তিস্তার জলের নীলের বাহার।


মিষ্টির দোকানে যেমনভাবে মিষ্টি সাজানো থাকে, ঠিক সেভাবেই পাহাড়ের গায়ে পাহাড়ি বাড়ি গুলো সাজানো। তা দেখতে ভারী সুন্দর লাগে। গোটা দার্জিলিং জুড়েই পাহাড় কেটে কত সারি সারি চা বাগান ঢেলে সাজানো, যেন সবুজের সমারোহ। এছাড়াও মেঘ আর দূরের হিমালয়ের আলো আর তার ছায়ার অসাধারণ শোভা।  

 
দার্জিলিংয়েই অবস্থান করেছে টাইগার হিল। সেখান থেকে ভোরের আকাশকে দেখলে মনে হবে অন্ধকারের আড়ালে সব মেঘ খোকারা ঘুমিয়ে পড়েছে। আর চোখে পড়বে ভোরের ঝাপসা আলোয় দূরের  হিমালয়ের সাদা বরফের চূড়া। পুবের আকাশে সূর্য লাজুক হাসি দেওয়া মাত্রই মনে হবে  যেন নীল আকাশে লাল আবির ঢেলে দিয়েছে কেউ। তখনি যেন জেগে ওঠে দুষ্টু মেঘেরা আর হেসে খেলে ওঠে পাখি গাছপালা আর তার সাথে মানুষজনও।




বেলা বাড়তেই পাহাড়ি এই দার্জিলিং শহরে নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে পাহাড়ি মানুষগুলি। এরপর সন্ধ্যে নামতেই আরেক অপরূপ দৃশ্য দেখা যায়।  অন্ধকারের মধ্যেও জোনাকির আলো যেমন মিট মিট করে জ্বলে ঠিক সেভাবেই দূরের ছোট ছোট আলোতে ভরে ওঠে গোটা শহর।
 
ছবি সৌজন্যে:  গুগল



Saturday, 26 October 2019

অযোধ্যার সৌন্দর্য


               

লালমাটির দেশ পুরুলিয়া। আর এই পুরুলিয়ার অন্যতম স্থান গুলির মধ্যে আকর্ষণীয় ও প্রধান পর্যটনকেন্দ্র অযোধ্যা পাহাড়। শোনা যায় ছোটনাগপুর মালভূমির সব থেকে বড় পাহারশ্রেণী হল এই অযোধ্যা পাহাড়। ঝর্ণা, হ্রদ, বাঁধ, একাধিক ছোট পাহাড় সম্বলিত এক সুদৃশ্য এই জায়গা যা মন কারার মত। 


পাহাড়ে ঢুকতেই প্রথমেই চোখে পড়ে পাখি পাহাড়। চারিপাশের জঙ্গল ঘেরা এই পাখিপাহাড়টি ঠিক তার নামের মতই রহস্যময়ী। শীতের শুরুতে এই পাখিপাহাড়ে পরিযায়ী পাখির আগমন শুরু হয়ে যায়। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন ধরণের অচেনা অজানা পাখি আসে এই সময়। অযোধ্যাকে আরো সৌদর্য করে তুলেছে এখানকার আপার ড্যাম, লোয়ার ড্যাম।



 এই ড্যামগুলির জল সংরক্ষণ করেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। স্নিগ্ধ নীলাভ এই ড্যামের জল অতীব সুন্দর। ঝর্ণা যেমন পাহাড়ের শোভাকে বাড়িয়ে তোলে, ঠিক তেমনই অযোধ্যা পাহাড়ের শোভাকে বাড়িয়ে তুলেছে বামনী ফলস্। সবুজ পাহাড়ের গা বেয়ে ঝরে পরা বামনী ফলস্ এর জল রোদের আলোতে ঝিলমিলয়ে ওঠে। তাতে দেখা যায় রংবাহারি ছোট ছোট কত পাহাড়ি মাছ । 


এই পাহাড়ের বৈশিষ্ট্যকে এক আলাদাই মাত্রা দিয়েছে এখানকার মার্বেল লেক। বাঁধ নির্মান করতে গিয়েই এই লেকের সৃষ্টি এমনটাই শোনা যায় । স্বচক্ষে না দেখলে বোঝা যাবে না এই লেকের অপরূপ সৌন্দর্য । 


ময়ূরপাহাড় থেকে অযোধ্যাকে দেখলে  অযোধ্যার সবুজকে সহজেই উপলব্ধি করা যায়। যা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। পাহাড়ের ওপরের দিকে আছে সিতাকুন্ডু। এই সিতাকুন্ডুতেই অবিরাম মাটির ভেতর থেকে জলের ধারা নেমে আসে। প্রচন্ড গরমে কুয়োতে যখন জল পাওয়া যায় না তখন এইখানে জল পাওয়া যায়। বলতে গেলে সারা বছরই যেন জল থাকে এখানে।






 সবুজে ঢাকা এই পাহারশ্রেণীর জায়গায় জায়গায় ছড়িয়ে আছে কত আদিবাসী গ্রাম। অতিব কষ্টে  অযোধ্যার বুকে তারা নিজেদেরর জীবন যাপন করে চলেছে। কিন্তু প্রকৃতির অপরূপ ছোঁয়াই যেন তাদের সব কষ্ট ভুলিয়ে দেয়।



  শালগাছের গহন অরণ্য ও নানাধরণের পাহাড়ি ছোট বড় গাছ গোটা পুরুলিয়া সহ অযোধ্যাকে করে তুলেছে আরও সুন্দর। এখানে আসলে চক্ষু স্বার্থক তথা ভ্রমনপিপাসা মিটবে বলে আশা করা যায়।

ছবি সৌজন‍্যে: অনামিকা নন্দী

Tuesday, 24 September 2019

ঋতুর রানী শরৎ



স্নিগ্ধ শরতে মুগ্ধ বাংলা...........






গোটা বছর ধরে ভিন্ন ভিন্ন ঋতুর আগমনের রূপে মেতে ওঠে আমাদের বাংলা। বাংলার ছয়টি ঋতুর মধ্যে শরৎ একটি বৈচিত্র্যময় ঋতু। ভাদ্র আশ্বিন দুই মাস জুড়ে এই শরৎ। কোমল ও স্নিগ্ধ ঋতুর রূপ যেন অনান্য ঋতুর তুলনায় ভিন্ন করে শরতকে।




ঋতু বৈচিত্র্যের এমন সুন্দর রুপ বাংলা ছাড়া আর হয়তো কোথাও নেই। অশ্রুঝড়া চোখে বর্ষকন‍্যাকে যখনই আমরা বিদায় দিই। তখনই ভাদ্রের ষ্পর্শে সূর্য মিষ্টি হাসি হেসে প্রকৃতিকে আগাম বার্তা দিয়ে আগামন জানায়  শরৎকে‌। বর্ষকন‍্যার অশ্রু থামা মাএই এক আকাশ নীলাভ মেঘের আগমন ঘটিয়ে মিষ্টি হাসিতে হেসে ওঠে শরৎ। শরতের এই ছোয়ায় প্রকৃতি যেন এক নতুন রুপ পায়। 



ভোর হতেই চোখ যায় ঘাসের উপর পরে থাকা সেই বিন্দু বিন্দু শিশিরে। শিশির ভেজা সবুজ ঘাসের উপর নিঃস্বার্থভাবে পরে থাকে শিউলি ফুলগুলি। তার এই মিষ্টি গন্ধ যেন ভরিয়ে তোলে প্রকৃতিকে। নদীর পাশে স্ণিগ্ধ হাওয়ায় মাথা দোলাতে থাকে কাশফুল। আকাশে ভেসে বেরানো একদল সাদা মেঘের মাঝখান থেকে উঁকি দেয় সূর্য। সূর্যের এই ঝলমল রোদে যেন হেসে ওঠে এই  কাশবন। উজ্বল নীলাভ আকাশে পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে ওড়ে। বয়ে যাওয়া শান্ত বাতাসের সাথে সাদা কাশফুলের তালমেলানোর যে মনোরম দৃশ‍্য, তা থেকে যেন চোখ সরানোই যায় না। ভাটিয়ালি গান গাইতে গাইতে নদীর বুকে নৌকা নিয়ে যায় মাঝিরা। কাশবন পেরিয়ে মাটির কলশি নিয়ে জল আনতে যায় গাঁয়ের বধূরা।


 গ্রামের বিলে ফুটে ওঠা লাল শাপলার অপরুপ দৃশ‍্য যা মন কাড়ার মত। মাঠ ভরা ধানক্ষেত হেসে ওঠে সূর্যের সোনালি আলোয়। সবুজ পাতায় ঘেরা গাছের ডালে শোনা যায় বসে থাকা পাখিদের কুজন।  এই সময় প্রকৃতির সাজে সেজে ওঠা শরৎ আগমনী বার্তা পাঠায় মা দূর্গা কে। শরতের আগমন আমাদের  মনে করিয়ে  দেয় দশভূজা দেবী দূর্গার কথা।



এই সময় আকাশে বাতাসে চারিদিকে ছরিয়ে পরে পূজো পূজো গন্ধ। মন মাতিয়ে তোলা ঢাকের আওয়াজ বয়ে আসে দূর থেকে। শরতের অতিথি হিসেবে  দেবী দূর্গাকে বরন করে নেয় সকলে। আর এই কটা দিন কাজের ব‍্যাস্ততা সরিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে সবাই।শহরের মানুষেরা শরতের অনুভূতি নিতে ছুটে আসে গ্রামবাংলার দিকে। প্রকৃতির উপর শরতের এই আলোরন জাগিয়ে তোলে ছোট থেকে বড় সকলকে।
শরতের মেঘমুক্ত আকাশ, নদীর তীরে সাদা কাশফুল ,শিশির ভেজা দুর্বাঘাসের উপর শিউলি, লাল শাপলার আবরন, আদিগন্ত সবুজের সমারহ, বিভিন্ন ফুলে ফলে সাজানো প্রকৃতি সবটা মিলিয়ে শরৎ যেন এক শুভ্রতার ঋতু।




      শরতের এই মনমাতানো সৌন্দর্য যেন রূপময় করে তোলে আমাদের বাংলাকে। শরতের স্নিগ্ধ মনোরম ‌দৃশ্য এক নতুন আমেজ দেয় প্রকৃতিকে। বছরে একটি বার তো সময় করে আসতেই হয় তাকে। ঋতু বৈচিত্র্যের  কল্পকথার এমন সুন্দর দৃশ্য ভারী মধুর। সব মিলিয়ে বলা যেতেই পারে বাংলার ঋতু হিসেবে শরৎ একটি বৈচিত্র্যময় মোহনীয় ঋতু। গ্রামবাংলার উপর ঋতুরানীর এই রূপ যেন সৃষ্টিকর্তার এক অপরূপ সৃষ্টি।



    ছবি সৌজন্যে : নীলাঞ্জনা দে






Friday, 30 August 2019

বৃষ্টিই সৃষ্টি


                               বৃষ্টি সৃষ্টি


হঠাৎ সেদিন.... গুটি গুটি পায়ে, হাতে এক কাপ কফি নিয়ে দাঁড়িয়ে পরলাম ব‍্যালকানির ধারে। দুচোখ ভরে বাইরের দৃশ্য যখন দেখছি মণে হচ্ছে গোটা শহরটা যেন থমকে আছে কিছুর অপেক্ষায়। 
হঠাৎই দক্ষিণা হাওয়া এসে যেন আমার সমগ্ৰ শরীরকে সতেজতার এক ণতুন অনুভব দিয়ে গেল। ঘরির কাটায়
তখন ঠিক চারটে বেজে পয়তাল্লিশ্ মিনিট। তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি সে গম্ভীর হয়ে আছে। কফির কাপে এক চুমুক দিতেই হঠাৎ  ঝঁম ঝঁমিয়ে বৃষ্টি পরতে লাগল, যেন মেঘকে আর বেধেঁ রাখা গেলনা।

ধুলায় মাখা শহরকে যেন এক নতুন রূপের ছোঁয়া দিল বর্ষা। শহর আবারও যেন হেসে উঠলো বৃষ্টির স্পর্শে। অঝোরে ঝরে পরা বৃষ্টির  সাথে বয়ে আসা হাওয়া যেন এক অদ্ভুত আবেগপ্রবণ। চোখে পরল দূরের কচু গাছটির দিকে যেখানে এক ফোঁটাও জল দারাচ্ছেনা, পাশের ফুলের বাগানটি যেন বর্ষার স্পর্শ পেয়ে হেসে উঠেছে। 

আর দূরের ওই বসে থাকা ভেজা দুটি পাখি যেন মনের সুখে কত গল্প করছে। পাশের মাঠটিতে বাচ্চা ছেলে গুলি কাদামাটি মেখে ফুটবল খেলছে, দেখে তো মন বলছে ভারী মজা লাগছে তাদের। গোটা বিকেলটাই বর্ষা যেন এক চমকে চমৎকার রূপ দিল শহরকে। তার সৌন্দর্য ঠিক তার নামের মতোই। এই বৃষ্টি কে উপেক্ষা করে কত না গল্প আছে, বৃষ্টিকে অনুভব করে কত না কবিতা লিখেছেন কবিরা।

বর্ষার আমেজে মন মাতিয়ে তুলতে বৃষ্টি তো প্রতিটি বছরই আসে। অনেকের কাছে বৃষ্টি হলেই চাই খিচুড়ি সাথে বেগুণ ভাজা আর ইলিশ মাছ। এই যে যেমন আমি বৃষ্টি হলেই এক কাপ কফি আর সাথে কিছু গান শুনতে ভালোবাসি। যাহ! আজ তো কফিটা ঠাণ্ডা হয়ে গেল। আজ তবে এতটাই থাক, আবারও ফিরে আসব নতুন কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে।

  ছবি সৌজন্যে : গুগল







ড্রিমল্যান্ড দার্জিলিং

                      ড্রিমল‍্যান্ড  দার্জিলিং দার্জিলিং  হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পাহাড়ঘেরা একটি সুন্দর শহর। এই শহরটি হিমালয়ের শি...